দর্শনার্থীতে মুখর বইমেলা

দর্শনার্থীতে মুখর বইমেলা

বাংলাদেশের আলো ডেস্ক : দেখতে দেখতে প্রায় অন্তিম সময়ে চলে এসেছে এবারের অমর একুশে বইমেলা। মেলার শুরু থেকেই দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী মেলা প্রাঙ্গণে ছুটে আসলেও বই বিক্রির বিষয়ে অংশগ্রহণকারী স্টলের কর্মীদের কণ্ঠে হতাশার সুর।

তারা বলছেন, ‘এবারের মেলায় বিক্রির অবস্থা বেশ খারাপ। ২ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হওয়ার পর প্রতিদিনই মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত সংখ্যক দর্শনার্থী আসছেন। তবে তাদের বেশিরভাগই বই কেনার থেকে ঘোরাঘুরিতে মত্ত।’

অন্বেষা স্টলের আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এবার মেলায় বিক্রির পরিমাণ তুলনামূলক অনেক কম। যারা মেলায় আসছেন, তাদের বেশিরভাগই ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ কেউ এসে বই হাতড়িয়ে দেখছেন। বই কিনছেন এমন সংখ্যা খুব কম।’

তিনি বলেন, ‘এবারের মেলায় প্রথমদিকে বিক্রি তেমন একটা হয়নি। গত সপ্তাহ থেকে কিছু বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের বছরের সঙ্গে তুলনায় এবার বিক্রি অনেক কম। বিক্রি কম হলেও মেলায় কিন্তু প্রতিদিনই মানুষ আসছে।’

জোনাকী প্রকাশনীর স্টলের সোহেল বলেন, ‘মেলায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসছেন। এদের মধ্যে থেকে বই কিনছেন গুটি কয়েক মানুষ। মেলায় আসাদের পাঁচ শতাংশ বই কিনছেন না। সবাই ঘোরাঘুরি, আর আড্ডা দিতেই ব্যস্ত।’

এদিকে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বিকেলে মেলার গেট খোলার পরপরই বই ও বিনোদনপ্রেমীরা মেলা প্রাঙ্গণে ছুটে আসেন। এতে এক ঘণ্টার মধ্যেই দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। তবে এদের বেশিরভাগই মেলার এদিক, সেদিক ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়।

মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের পর উত্তর দিকে দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি দেখা যায়। উত্তর দিকে থাকা দৃষ্টিনন্দন লেকটি মেলায় আসাদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করছে। এ কারণেই হয় তো একটি বড় অংশই লেকের পাড়ে বসে অথবা রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুগ্ধতার দৃষ্টিতে লেকের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। কেউ কেউ লেক পাড়ে নিজের ছবি মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করছেন।


 
আলেয়া নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ‘আসি আসি করে এতদিন বই মেলায় আসা হয়নি। আজ চলে আসলাম। মেলায় আসার মূল উদ্দেশ্য হলো- ঘোরাঘুরি করা। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করব। এর মধ্যে কোনো বই পছন্দ হলে কিনে নেব।’

পরিবার নিয়ে আসা রোহান বলেন, ‘আমি প্রতিবছর বইমেলায় আসি। ঘোরাঘুরি, বই কেনা দু’টিই হয়। আজ নিয়ে এবার তিনদিন মেলায় আসলাম। তবে এখনো একটি বইও কেনা হয়নি। মেলায় মনের মতো বই খুঁজে পাচ্ছি না। আবার কিছু স্টলে দেখছি নিম্নমানের বইতে ভরা। এটা দেখে কিছুটা খারাপও লাগছে। মেলার আয়োজকদের ভালোমানের বই আনার জন্য উৎসাহ দেয়া উচিত। সেই সঙ্গে নিম্নমানের বই নিরুৎসাহিত করা উচিত।’

বন্ধুরা মিলে ঘুরতে আসা হৃদয় বলেন, ‘ঢাকার মানুষের বিনোদনের জায়গা খুব কম। তাই বন্ধুরা মিলে খুব একটা ঘোরাঘুরি করা হয় না। তবে বইমেলা আসলে বন্ধুরা দল বেঁধে ঘোরাঘুরি করার একটা বড় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বই মেলায় দল বেঁধে ঘোরাঘুরি করতে খুব মজা লাগে। তাছাড়া এবার মেলার পরিবেশ অনেক ভালো। মেলার জায়গা যেমন বেশি, তেমনি যথেষ্ট খোলামেলা। আর লেকটা যেভাবে নেয়া হয়েছে, তা মেলার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে।’