প্রধানমন্ত্রীর প্রধান টার্গেট খালেদা জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া: রিজভী

প্রধানমন্ত্রীর প্রধান টার্গেট খালেদা জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক:বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, তিনবারের সর্বাধিক ভোটে নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন বিনা ভোটের সরকার। দেশের জনগণের আর বুঝতে বাকি নেই যে, প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রধানমন্ত্রীর প্রধান টার্গেট এখন দেশনেত্রীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া।


মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, মৃত্যুর সাথে লড়াই করা দেশনেত্রীর সমস্ত মৌলিক মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকারকে পদদলিত করে তাঁকে সুচিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। বিদেশে উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে সূক্ষ্ম মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে কিনা এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে জনমনে। বেগম খালেদা জিয়াকে যখন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী কারাগারে নেয়া হয়েছিলো তখন তিনি কারাগারের ভেতরে হেঁটে গেছেন। কিন্তু আজ কেনো তাঁর এই ভয়ানক অবনতিশীল শারীরিক অবস্থা ? এ প্রশ্নের জবাব সরকার, কারাগার ও পিজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একদিন দিতেই হবে। আরেকটা প্রশ্নের জবাবও সরকারকে দিতে হবে। এখন দেশনেত্রীর জীবনকে নিঃশেষ করে দিতে শেখ হাসিনার প্রকাশ্য প্রতিহিংসার প্রকাশ দেখা যাচ্ছে নানাভাবে।


তিনি বলেন, বেগম জিয়ার পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। ৬ মে ২০২১ অর্থাৎ সাত মাস আগে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করা হয়েছিলো। এতেই প্রমাণিত হয়-সরকার দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশ যেতে দিতে রাজী নয়। তিলে তিলে তাঁকে নিঃশেষ করাই এই মূহুর্তে আওয়ামী সরকারের কর্মসূচি।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বেগম খালেদা জিয়া। চিকিৎসকরা বলছেন-বাংলাদেশে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব নয়। দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা না দিলে তাঁকে বাঁচানো যাবে না। বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে দেশবাসী যখন সোচ্চার, বাজার-বন্দর-হাট-ঘাট-চায়ের দোকান-গণমাধ্যম-সোশ্যাল মিডিয়া-রাজপথে প্রতিবাদী মিছিলে সর্বত্র যখন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোচ্চার, তখন মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে নিতে নতুন নতুন নাটক তৈরী করা হচ্ছে।


তিনি আরো বলেন, অবৈধ সরকারের মন্ত্রিত্বের সুযোগ নিয়ে প্রতিদিন বিএনপি তথা জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে খিস্তিখেউড় করাই ছিলো তার একমাত্র কাজ। খিস্তিখেউড়ে তথ্য-প্রতিমন্ত্রী মুরাদ তার সিনিয়রদের অতিক্রম করে দিনে দিনে দুর্বিনীত হয়ে উঠেছিলো। ভব্যতা সভ্যতার সকল সীমা অতিক্রম করে মুরাদ জনগণের সামনে দানবের মতো আবির্ভূত হয়েছে। এরা আমাদের সমাজে বসবাস করবে, কিন্তু তাদের আচরণ, চলাফেরা ও কথাবার্তায় প্রতিফলিত হয় কুরুচি, বিবেকবর্জিত ও নারী বিদ্বেষ। তাহলে সেই সমাজে কত বিষাক্ত নৈরাজ্য তৈরী হতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যায়। নারীবিদ্বেষী, বর্ণবিদ্বেষী মুরাদের মানসিকভাবে বিকৃত বক্তব্য সারা জাতিকে হতবাক ও স্তম্ভিত করেছে। উপর মহল থেকে আস্কারা পেয়ে অসুস্থ মানসিকতার একজন ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা থাকলে ক্ষমতার অপব্যবহারে সে যে বিকারগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে তথ্য-প্রতিমন্ত্রী মুরাদ সেটির একটি প্রমাণ।


রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ফেনীতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাংগঠনিক কাজে ফেনী সফররত মহিলা দল কেন্দ্রীয় সভাপতি বেগম আফরোজা আব্বাসকে ফেনীর কোনো হোটেলে থাকতে দেয়নি সরকারের আজ্ঞাবাহী পুলিশবাহিনী। তিনি তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ফেনীতে রাত্রিযাপনের জন্য হোটেল বরাদ্দের চেষ্টাকালে পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে জানিয়ে দেয়া হয় আপনারা কোনো হোটেলে রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। পুলিশের এই ধরণের ন্যাক্কারজনক আচরণের বিরুদ্ধে আমি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।


সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, শ্যামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।

বিআলো/শিলি